আহমাদুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে দুই দিন ব্যাপী ভার্চুয়ালি অনুষ্টান সম্পন্ন হয়েছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া দুদিনের এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং অমর একুশের চেতনা সুপরিচিত করার প্রয়াসে বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতির সম্মিলনে এ আয়োজন।
কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাই কমিশন জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল অফ লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস, টেলর ইউনিভার্সিটি, মালায়া এবং পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতি মালয়েশিয়া (এমওএটিসি) এর সহযোগিতায় অনষ্টিত অনুষ্টানে অংশ নেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে এম আব্দুল মোমেন, মালয়েশিয়ার পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী দাতুশ্রী হাজাহ ন্যান্সি শুকরি। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ একে আবদুল মোমেন বলেন- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন মাতৃভাষাকে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র বৃদ্ধি এবং আন্তঃসংস্কৃতিক সংলাপ সহ সকলকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক মনে করিয়ে দেয়ার এক উপযুক্ত উপলক্ষ।
প্রথম দিনের ইভেন্টে মন্ত্রি-পর্যায়ের বক্তব্য শেষে চলে একটি প্যানেল আলোচনা। আলোচনায় ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারীর ভাষা শহীদদের স্মৃতি শ্রদ্ধা জানাতে বাংলা ও মালয় ভাষায় “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি” শিরোনামের একটি গান পরিবেশিত হয়। মালয়েশিয়া টেলর ইউনিভার্সিটির এক্সিকিউটিভ ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান ব্যবস্থাপনা অনুষদের প্রফেসর ডাঃ নীথিয়াহেন্থান এরি রগভান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি, মালয়েশিয়ার পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতিমন্ত্রী, দাতু’শ্রী ন্যান্সি শুকরি এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রথম দিনের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিথি হিসাবে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ এর এই শুভ উপলক্ষে এটি আন্তঃসীমান্ত বহুভাষিক কর্মসূচি দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির মধ্যে ভাষা ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগের সেতু হিসাবে কাজ করবে”।
মালয়েশিয়ারা পর্যটন, কলা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের অনুবাদক হিসাবে ভাষা সংরক্ষণ ও সংরক্ষণের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে বিশ্বব্যাপী উদযাপনে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন, এবং এর গুরুত্বকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফকরুল আলম, মালয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি অফ মালয় স্টাডিজের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট অধ্যাপক ড. সালিনা বিনতি জাফার, , ইউনেস্কোর এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিওনাল ব্যুরো অফ এডুকেশন এর ডিরেক্টর মিঃ শিগেরু আয়াগি বক্তা হিসাবে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন। এছাড়াও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ও মানবিক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম এবং টেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডজান্ট প্রফেসর ড. ওয়ান জাওয়াই ওয়ান ইব্রাহিম আলোচক হিসাবে প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন।
ইভেন্টের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্টানে অংশ নেন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোঃ গোলাম সরোয়ার এবং বাংলাদেশে অবস্থিত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মিসেস হাজনা মোঃ হাশিম। আলোচনা শেষে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়াার লাইভ পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপের মতো দেশগুলি রেকর্ড করা ভিডিওর দ্বারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয়, বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার পাশাপাশি ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপের পারফরম্যান্স উপস্থাপন করা হয়। এ ছাড়া ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাাতিক মাতৃভাষা মালয়েশিয়া ইউনেস্কো কর্তৃক যথাযথ ভাবে পালন করা হবে বলে দূতাবাস সূত্রে গেছে।