আহমাদুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি:
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে লকডাউন এবং অচলাবস্থার কারণে বহুমাত্রিক সংকট দেখা দিয়েছে মালয়েশিয়া প্রবাসীদের মাঝে। এরই মাঝে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।
এ দিকে সংক্রমণরোধে দেশটির সরকার টিকা প্রদানে জোর দিয়েছে। দুই ডোজ টিকা সম্পন্নকারিরা কর্মক্ষেত্রে যোগদিতে পারবেন এমনটিই জানান দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে চলমান লকডাউনে কিছুটা শিথিলতা আনলেও দেশটিতে বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত বাংলাদেশিরা একদিকে বেতন পাচ্ছেন না আবার অন্যদিকে অনেকে ছাটাই এবং মজুরি হ্রাসের কবলে পড়েছেন।
দেশটিতে অবস্থানরত প্রবাসীদের অনেকেই এখন বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছেন না। চাকরি নিয়েও রয়েছে দুশ্চিন্তায়। মালয়েশিয়ায় কর্মরত সাইদুল মিয়া জানান, গত চার মাস ধরে তিনি দেশে টাকা পাঠাতে পারছেন না। গত মাসে বেতনভাতাও পাননি। তিনি যে কারখানায় কাজ করেন সেটিও বন্ধ। “বাড়ী থেকে যোগাযোগ করতেছে যে টাকা পয়সা দরকার।
এমন পরিস্থিতিতে দেশ থেকে কারো সাহায্য নেওয়ার কথা বললে বলেন, “কোনোটাইতো হইতেছে না। এখানে আমরা আছি করুণ অবস্থায়। “সমস্যাতো এখানেই দাঁড়াইছে দেশে আমরা কারো কাছে হাত পাততে পারতেছি না, কারো কাছে বলতেও পারতেছি না।”
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মালয়েশিয়ায় যে কড়াকড়ি চলছে তাতে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সবাই। এছাড়া মহামারির প্রভাবে দেশটির অর্থনীতিও মন্দার কবলে। এ অবস্থায় বহু প্রতিষ্ঠানে বেতন কাটা হচ্ছে এবং শ্রমিক ছাঁটাই শুরু হয়েছে বলে জানান প্রবাসী সোহাগ মিয়া।
তিনি বলেন, “আমার নিজের কোম্পানি প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাই করতেছে। ছাঁটাই একটা বিরাট সমস্যা হয়ে গেছে। আরেকটা সমস্যা হচ্ছে বেতন কাটতেছে। ধরেন যাদের বেতন দেড় থেকে দুই হাজার ছিল তাদের বেতন এক হাজার থেকে ১২শর মধ্যে নিয়ে আসতেছে।”
এ পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে থাকা প্রবাসীদের পরিবারগুলোতে আর্থিক সংকট দেখা দিচ্ছে। কথা বলে বোঝা যাচ্ছে তারা অনেকেই সংকটে পড়েগেছেন।
আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি দেশে এসে কর্মস্থলে ফেরা নিয়েও অনিশ্চয়তায় দেশে ছুটিতে থাকা প্রায় ২৫ হাজার মালয়েশিয়া প্রবাসী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে মতে শীর্ষ ৩০ টি দেশ থেকে অসা রেমিটেন্সের মধ্যে ৫ম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া। গত অর্থ বছরে প্রতিমাসে গড়ে মালয়েশিয়া থেকে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসত দেশে। বর্তমানে চলমান করোনার কারনে গত জুন-জুলাইয়ে নেমে এসেছে ১০৫ মিলিয়ন ডলারে। যা ৫ম স্থান থেকে ৭ম স্থানে চলে এসেছে। করোনা মহামারির প্রভাবে প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর পরিমাণ আরো কমতে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।