আহমাদুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি:
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের আয়োজনে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে দূতাবাসের হলরুমে এ দিবসটি পালন করা হয়।
হাই কমিশনার মো: গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে ও দূতালয় প্রধান ও প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রুহুল অমিনের পরিচালনায় পবিত্র কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত ও শহদিদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভা শুরু হয়।
আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতির বানী পাঠ করেন, শ্রম কাউন্সিলর মো: জহিরুল ইসলাম, প্রধান মন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন, শ্রম কাউন্সিলর (২) মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল।
গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার তার বক্তব্যে বলেন,একাত্তরের অগ্নিঝরা এদিনে বাঙালী জাতি তথা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ইতিহাসের বিভীষিকাময় ভয়াল ও নৃশংসতম বর্ববরতা।
একাত্তরের ২৫ মার্চ মধ্য রাতে গণহত্যার নীলনকশা ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে পাকিস্তানী দানবরা মেতে উঠেছিল নির্বিচারে স্বাধীনতাকামী বাঙালী নিধনযজ্ঞে। ঢাকাসহ দেশের অনেকস্থানেই মাত্র এক রাতেই হানাদাররা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল প্রায় লক্ষাধিক ঘুমন্ত বাঙালীকে।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত দেশ ও জাতির ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। তিনি বলেন, ‘গণহত্যা দিবস’ বাংলাদেশের মুুক্তিসংগ্রামে ত্রিশ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগের মহান স্বীকৃতির পাশাপাশি তৎকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বর গণহত্যার বিরুদ্ধেও চরম প্রতিবাদের প্রতীক।
হাইকমিশনার বলেন, ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানী বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে। গণহত্যা দিবসে ‘আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতাকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
জাতীয় গণহত্যা দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমোডর মোস্তাক আহমেদ, কাউন্সিলর (কন্স্যুলার) মো: মাসুদ হোসাইন,পাসপোর্ট ও ভিসা শাখার কাউন্সিলর মো: মশিউর রহমান তালুকদার, কাউন্সিলর (বাণিজ্যিক) মো: রাজিবুল আহসান, শ্রম শাখার প্রথম সচিব ফরিদ আহমদ সহ দূতাবাসের সকল স্থরের কর্মকর্তা-কর্মচারি বৃন্দ। আলোচনা সভা শেষে ৭১ এ বাংলাদেশের প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
এ দিকে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়া সরকারের দেয়া বিধি-নিষেধের কারণে অনুষ্ঠানে কেবলমাত্র দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। তবে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে লাইভ প্রচার করে প্রবাসীদের অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।