পাবনা সংবাদদাতা:
পাবনা জেলার অন্তর্গত আতাইকুলা থানার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গনেশপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহীন আলম ওরফে কালু। জানাগেছে, মাদক ব্যবসা জমজমাট করতে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিলেন এই কালু শাহিন। একই সাথে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এছাড়া আতাইকুলা থানার সর্বস্তরের জনগণ তাকে মাদক সম্রাট হিসেবে জানে এবং চেনে।
গত ০৭/০১/২১ তারিখে তার নামে থাকা একটি মাদকের মামলায় পাবনা জেলা জজ কোর্টে হাজিরা দেওয়ার জন্য হাজির হলে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে পাবনা জেলা আমলী আদালত। এতে করে উক্ত এলাকায় সাধারণ মানুষ ফেলছে স্বস্তির নিঃশ্বাস।
তাদের শংকা, এবার যদি টাকার বিনমিয়ে এ মাদক সম্রাট বের হয়ে আসে তবে আবারও মাদকের আখড়ায় পরিণত হবে আতাইকুলা থানার ভুলবাড়িয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড। শান্ত এ এলাকাকে অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও চাঁদাবাজি করে অশান্ত করতে পারে।
অতীত বলছে, ২০১৩ সালে শাহিনের থাকার মাত্র একটি টিনের ঘর এবং ৭ শতাংশ জমি ছিলো। কিন্তু মাত্র ৭ বছরের ব্যবধানে শাহিন ও তার স্ত্রীর নামে ৮-৯ বিঘা জমির মালিক বনে গেছেন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য পঞ্চাশ লক্ষাধিক টাকা প্রায়। এছাড়া গনেশপুর বাজারের সন্নিকটে বাড়ির জায়গাসহ ৩ তলা ফাউন্ডেশনের ২য় তলা পর্যন্ত বাড়ি করেছে হাইব্রীড এ নেতা।
বিগত ৭ বছর আগেও যে ফার্মেসীর দোকানে কাজ ও দুধ বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। সরকারি দলের ছত্রছায়ায় সেই শাহীন তারপর শুরু করে তার মাদক ব্যবসা ও গড়ে তোলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। রাতারাতি বদলাতে থাকে তার রূপ। মাদক বিক্রি করতে অস্বীকৃতি জানালে শাহিন তাকে ধরে এনে শুরু করে মারধর, যার নজির রয়েছে অত্র এলাকায়। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, সাধারণ মানুষের যে কোন ধরনের সমস্যায় শালিশ/দরবার করার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক মানুষকে নিঃস্ব করেছে এই কালু শাহিন।
জানাগেছে, আতাইকুলা পূর্বালী ব্যাংক ও আতাইকুল ইউনিয়ন ব্যাংক, বনোগ্রাম কৃষি ব্যাংকে প্রায় ২ থেকে ২.৫ কোটি টাকা জমা আছে তার। এছাড়া গনেশপুর গ্রামের আব্দুস সামাদ (পিতা: বদন) এর নিকট থেকে দেড় লাখ টাকা ও আমিনের স্ত্রী বিধবা ভানু ও তার ছেলেদের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা জমির সমস্যা সমাধান করার নামে নিয়েছে গরীবের ঘাম ঝরানো এ টাকা। এছাড়া গ্রামের অনেক মানুষের নিকট থেকে বিভিন্ন অজুহাতে হাতিয়েছে লাখ লাখ টাকা। বিনিময়ে মিলেছে হুমকি ধামকি।
২০১২ সালের আগেও শাহিন ছিলো শিবিরের সক্রিয় কর্মী। যিনি রূপ বদলিয়ে বর্তমানে যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চলছিলো দেদারছে। শাহিনের নামে থানায় হত্যা মামলাসহ একাধিক মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মামলা রয়েছে। এমনকি বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাঈদের পক্ষে সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করেন। আর তখনই তিনি আওয়ামীলীগ প্রার্থী শামসুল হক টুকু’র নৌকা প্রতীক পোড়ানোর কাজে সহযোগিতা করেন।
জানাগেছে, শাহীন তার বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ জায়েজ করার জন্য ইউপি মেম্বার হওয়ার পায়তারা করছে। তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, আইজিপি মহোদয়ের কাছেও অভিযোগ দিয়েছে বলে জানাগেছে। এমতবস্থায় দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অত্র এলাকাবাসী।