পৃথিবীর ১৬৮ দেশে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ বাংলাদেশি বসবাস করেন। এরা প্রতিবছর রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গত বছর এই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন রেকর্ড সৃষ্টিকারী ২২ বিলিয়ন ইউএস ডলার। প্রবাসীদের প্রত্যেকেই কোনো-না-কোনোভাবে দেশের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। রয়েছেন পারিবারিক ও আত্মীয়তার বন্ধনে।
সার্বিক পরিস্থিতি বলছে, প্রবাসীরা দেশের বাহিরে থাকায় নানা জটিলতার প্রতিনিয়ত শিকার হন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা। আবার কখনো প্রতারিত হন নিজের পরিবারের সদস্যদের দ্বারাও।
শেষ ভরসা হিসেবে প্রবাসীরা তখন দ্বারস্থ হন আদালতের। কিন্তু এবারে বাঁধসাধছে এই শেষ ভরসাস্থলেও, তৈরি হয়েছে নতুন জটিলতা। গত ১৫ জুন মহামান্য হাইকোর্ট এক আদেশে বলেছেন, এখন থেকে মামলা করতে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে।
দেশে বসবাসকারী নাগরিকদের জন্য এটি কষ্টসাধ্য নয় এবং অনেক ক্ষেত্রে এর প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। কিন্তু প্রবাসীদের জন্য এই আদেশ সৃষ্টি করবে বিরাট জটিলতা। কারণ প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ প্রবাসীদের মধ্যে বেশিরভাগ প্রবাসীর কাছে নেই এনআইডি। যদিও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা প্রবাসীদের জন্য এনআইডি প্রদানের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে তবে কাজটি অনেক কঠিন ও সময়সাপেক্ষ।
সুতরাং প্রবাসীরা যদি এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র ছাড়া আদালতের দ্বারস্থ হতে না পারে তাহলে তাদের সহায় সম্পত্তি রক্ষার শেষ আশ্রয় স্থলটিতে পৌঁছাতে সৃষ্টি হবে জটিলতা।
এই সুযোগে প্রভাবশালীরা প্রবাসীদের সম্পত্তি দখলের চেষ্টায় আরো বেশি সফল হবে। সামগ্রিক বিবেচনায় প্রবাসীদের আপাতত এই আদেশটি থেকে বাইরে রাখা যায় কিনা এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।
✎ এম এস সেকিল চৌধুরী
চেয়ারপার্সন, সেন্টার ফর এনআরবি।