ডেস্ক নিউজ :
করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) সংক্রমণ প্রতিরোধে এস্ট্রাজেনেকার টিকা কাজ করবে বলে জানিয়েছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এস্ট্রাজেনেকা আরো বলেছে, রূপান্তরিত এই করোনা ভাইরাসের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছে তারা। ইমেইলে এস্ট্রাজেনেকার একজন প্রতিনিধি বলেছেন, এজেডডি১২২২তে (এস্ট্রাজেনেকার টিকা) আছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের স্পাইক (ভাইরাসটির গায়ে কাঁটার মতো দেখতে) প্রোটিনের জেনেটিক উপাদান। নতুন ধরনের ভাইরাস সংক্রমণে বা ভাইরাল স্ট্রেইনে জেনেটিক কোডের যে পরিবর্তন দেখা গেছে, তা দৃশ্যত স্পাইক প্রোটিনের গাঠনিক কাঠামোর কোনো পরিবর্তন করে বলে মনে হয় না। ওদিকে নতুন করে দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাসের টিকা কতটা কার্যকর তা পরীক্ষা করে দেখছে ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এই ভাইরাস এরই মধ্যে বৃটেনে ব্যাপক আকারে দেখা দিয়েছে। এতে ইউরোপের সঙ্গে বৃটেনের যোগাযোগ বলতে গেলে বন্ধই হয়ে আছে।
বর্তমানে বৃটেনে করোনাভাইরাসের যে নতুন ধরণটি দ্রুত ছড়িয়েছে তার বিরুদ্ধে এস্টাজেনেকার টিকা কতটা কার্যকর হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
মহামারী সংক্রমণের এই ভয়বহতা থেকে কোন টিকা কতটা কার্যকর সেটা পরীক্ষার জন্য এটি এখন সর্বশেষ চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করছে টিকা সংশ্লিষ্টরা। এস্ট্রাজেনেকার ওই প্রতিনিধি আরো বলেন, এজেডডি ১২২২ টিকা নেয়ার ফলে তা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনগুলোর বিভিন্ন অংশকে শনাক্ত করতে বা চিনতে পারে। এর মাধ্যমে এই টিকা এই ভারাসকে ধ্বংস করতে পারে।
বি.১.১.৭ নামে চিহ্নিত করোনার এই নতুন রূপটি করোনার আগের সব ধরনের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি দ্রুত গতিতে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। যা শিশুদের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এটি বৃটেনে সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। যার ফলে দেশটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অনেক দেশ। এর ফলে বৃটেনে বিশৃংখল এক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপের বাণিজ্য বিঘিœত হচ্ছে। আর এর মাধ্যমে বৃটেন যেন এক নিঃসঙ্গ দেশে পরিণত হয়েছে। ইউরোপের এই দেশটি অন্যান্য দেশের সঙ্গে তার সকল যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করেছে। এতে তাদের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। এস্ট্রেজেনেকা-অক্সেফোর্ড উদ্ভাবিত এই টিকাটি নি¤œ আয়ের দেশগুলো এবং উষ্ণ জলবায়ুতে বাস করা লোকেদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। কারণ এটির মূল্য অন্য টিকার তুলনায় কিছুটা কম, পরিবহন করা সহজ এবং সাধারণ রেফ্রিজারেটরের তাপমাত্রায় দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে। ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর চাহিদা বেশি হবে বলে টিকা সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্য এবং ব্রাজিলে এস্ট্রাজেনেকার টিকার শেষ ধাপের পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এতে দেখা গেছে এই টিকার পূর্ণাঙ্গ দুটি ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে টিকার কার্যকারিতা শতকরা ৬২ ভাগ। কিন্তু ছোট একটি গ্রুপকে প্রথমে অর্ধ ডোজ এবং পরে পূর্ণাঙ্গ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছিল। তাদের ক্ষেত্রে এ টিকার কার্যকাারিতা শতকরা ৯০ ভাগ। ভারতে আগামী সপ্তাহের মধ্যে এস্ট্রেজেনেকার এই টিকা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিতে পারে বলে মঙ্গবার প্রতিবেদনে জানানো হয়।
সূত্র: মানবজমিন