বাংলাদেশের আলু ও পটল বিক্রি হচ্ছে মালয়েশিয়ার বৃহৎ শপিং মল লুলুতে

কালের কলম
3 Min Read

আহমাদুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি: 

বাংলাদেশের কৃষি পণ্য আলু ও পটল বিক্রি হচ্ছে মালয়েশিয়ার বৃহৎ শপিং মল লুলুতে। মলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশের শব্জি ও ফল। সব দেশের পতাকা সম্বলিত শবজি ও ফলের দামও আটকানো হয়েছে সেখানে। বাংলাদেশের আলু কেজি প্রতি দাম লেখা রয়েছে ১.৯৯ রিঙ্গিত এবং পটলের কেজি প্রতি দাম লেখা রয়েছে ১২.৯৯ রিঙ্গিত।

১৯ মে সরেজমিন বৃহৎ এ শপিং মল লুলুতে দেখা গেছে, ক্রেতাদের বাংলাদেশের আলু ও পটলের প্রতি চাহিদা। কয়েকজন ক্রেতা বাংলাদেশের ষ্টিকার সম্বলিত আলু-পটল ৫ কেজি ও ২ কেজি করে কিনে নিচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ক্রেতা বলেন, বাংলাদেশী শবজি তার খুব পছন্দ, তাই সবসময় তিনি তার পছন্দের শবজি ক্রয় করেন।

মালয়েশিয়ার মালাক্কা এলাকার সিতি নূরাইনি, তিনি থাকেন কুয়ালালামপুর শহরে। চলমান বিধিনিষেধের কারনে এক সঙ্গে প্রচুর সওদা করেছেন তিনি। এর মধ্যে তালিকায় তার পছন্দের শবজি আলু ও পটল। অন্যান্য দেশের এ আইটেম থাকলেও দেখা গেলো কিনেছেন বাংলাদেশের আলু ও পটল। প্রশ্ন করা হলে সিতি জানান, বাংলাদেশের আলু তার পছন্দ।

লুলুতে কাজ করেন প্রায় ২০ জন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে টাঙ্গাইলের শফিক দু, বছর ধরে লুলুতে কাজ করছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শফিক জানান; আমাদের দেশের শবজির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এখানে। দুই বছর ধরেই দেখে আসছি ক্রেতারা কিনে নিচ্ছেন আমাদের দেশের শবজি। দেশের শবজি বিদেশের মাটিতে বিক্রি হচ্ছে এটাই তার আনন্দ। শফিক আরোও জানান, বাংলাদেশের কৃষিপণ্যর পাশাপাশি প্রাণ কোম্পানির মুড়ি, জুস, বিস্কুট ও বিক্রি হচ্ছে লুলুতে।

মালয়েশিয়ার বুকে বাংলাদেশী প্রাণ কোম্পানির আনিছ আহমেদ জানান, লুলুতে প্রায় ২৫ টি আইটেম বিক্রি হচ্ছে। সাউথ এশিয়া ফুডের মধ্যে প্রাণের চাহিদা অনেক।

এ দিকে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) কর্তৃক উৎপাদিত আলু চলতি বছরে মালয়েশিয়ায় রপ্তানি শুরু করে। এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ন্যানো গ্রুপ ও বিএডিসির মধ্যে আলু উৎপাদন ও রপ্তানিবিষয়ক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী বিএডিসি এ পর্যন্ত ৪টি কনটেইনারের মাধ্যমে মোট ১১১ টন ডায়মন্ড জাতের আলু মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করেছে। মালয়েশিয়ার আমদানিকারক কোম্পানি মাইডিন মালয়েশিয়া, চিন হুয়াত ট্রেডিং ও টেনবিলি গ্রুপ এ আলু আমদানি করে।

বিএডিসির ইতিহাসে এটাই সর্বপ্রথম মালয়েশিয়ায় আলু রপ্তানি। রপ্তানিকৃত এ আলু বগুড়া, পঞ্চগড় ও সিরাজগঞ্জ থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।
বিএডিসির মানসম্মত বীজ আলু উৎপাদন, সংরক্ষণ ও কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় চুক্তিবদ্ধ চাষ বা কনট্রাক্ট ফার্মিংয়ের মাধ্যমে ডায়মন্ড জাতের উন্নতমানের এ আলু উৎপাদিত হয়ে আসছে।

মালয়েশিয়া প্রতিবছর প্রায় একশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের আলু আমদানি করে থাকে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি আলু আমদানি করে চীন থেকে।

মালয়েশিয়ার অন্যান্য প্রধান আলু আমদানিকারক দেশগুলো হলো, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।

বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সিলর (বাণিজ্যিক) মো. রাজিবুল আহসান জানান, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ায় খাদ্য পণ্য বিশেষ করে কৃষি পণ্যের আমদানি আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। এ ছাড়া অন্যান্য কৃষি পণ্যের পাশাপাশি সম্প্রতি মালয়েশিয়াতে নতুন করে বাংলাদেশের কাচা কলা ও লেবু রফতানীর উদ্যোগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাইকমিশনের কাউন্সেলর বাণিজ্যিক রাজিবুল আহসান।

Share This Article
Leave a comment