আহমাদুল কবির, বিশেষ প্রতিনিধি:
মালয়েশিয়ার সংসদে মানব সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান বলেছেন, কর্মীদের স্বার্থ সুরক্ষায় তার মন্ত্রণালয় তৎপর রয়েছে। তিনি বলেন, আট হাজারেরও বেশি নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে এবং অভিযোগগুলো এসেছে মোবাইল অ্যাপ ওয়ার্কিং ফর ওয়ার্কারস এর মাধ্যমে।
সম্প্রতি কর্মীদের নিকট থেকে অভিযোগ গ্রহণ করতে মানব সম্পদ মন্ত্রণালয় এই অ্যাপটি চালু করে। অভিযোগ গ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে বুধবার সংসদে মানব সম্পদ মন্ত্রী বলেন, গত মে থেকে এ পর্যন্ত ৮,৫৯৯ টি অভিযোগ এসেছে এবং ৭,৫০২ টি অভিযোগের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনা কালে সরকার প্রদত্ত নিয়ন্ত্রণ আদেশের অধীনে সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মীরা যাতে অফিসে এসে কাজ করতে বাধ্য না হয় সে বিষয়ে তথ্য প্রদানের জন্য একটি নতুন বিভাগ যুক্ত করা হয়েছে। অ্যাপটিতে নিয়োগ চুক্তির বিরোধ, বিলম্বে বেতন প্রদান, ছুটিতে যেতে বাধ্য করা, অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা, বিদেশী কর্মীদের কর্মসংস্থানের প্রতিবেদন না করা, স্ট্যান্ডার্ড আবাসন এবং অনুপযুক্ত আচরণের সাথে জড়িত ১৪ ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে জানানোর সুযোগ রয়েছে।
সাবেক মানব সম্পদ মন্ত্রী এম কুলা সেগারান (পিএইচ-ইপোহ বরাত) এর এক প্রশ্নের উত্তরে সারাভানান বলেন, মালয়েশিয়ায় চাকরির জন্য মাইফিউচারজবসকে জাতীয় পোর্টাল হিসেবে চালু করেছে।
তাছাড়া, নিয়োগকর্তা এবং সেন্টার লেবার কোয়ার্টার্স (সিএলকিউ) এ জন্য উনচল্লিশটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল। বিশেষ করে যারা নোংরা আবাসনে বসবাসরত ছিল তাদের আবাসস্থলের অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কর্মীদের অস্থায়ী কোয়ার্টারে স্থানান্তর করা হয়। এরকম সুবিধা পেয়েছে ২,৯৪২ জন কর্মী।
ওয়ার্কার্স মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ডস অফ হাউজিং অ্যান্ড অ্যামেনিটিস অ্যাক্ট ১৯৯০ (অ্যাক্ট ৪৪৬) এর অধীনে নির্দেশ জারি করা হয়েছিল যে প্রাথমিক আবাসন যদি উপযুক্ততা থেকে কম পাওয়া যায় তবে কর্মীদের অস্থায়ী আবাসনে স্থানান্তরিত করা হবে। সেইসাথে পর্যটন, শিল্প ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিবন্ধিত হোটেলগুলিও সাময়িক আবাসন হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, ২৪ আগস্ট পর্যন্ত মোট ২৩,৯৯৩ জন নিয়োগকর্তা এবং ১২৯,৬৬৮ জন কর্মীর কোয়ার্টার পরিদর্শন করা হয়েছে যা ৮০৪,২০৪ জন অভিবাসী শ্রমিক এবং প্রায় ১.২ মিলিয়ন স্থানীয় শ্রমিকদের আবাসন স্বার্থ জড়িত।
তিনি আরো বলেন, মোট ৯৪০ টি তদন্তে বিভিন্ন ভুলের জন্য ৬১৮ টির বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে। এবং সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৮ অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ২৫০ টির বিরুদ্ধে শাস্তি হিসেবে ২.২ মিলিয়ন রিঙ্গিত জরিমানা করা হয়েছে। তাদের অপরাধ হলো, এসওপি মেনে চলতে না পারা, অনুমতি ছাড়া কাজ করা, এন্ট্রি ও এক্সিট রুট দিতে ব্যর্থ হওয়া এবং সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলা। আইনের অধীনে গৃহকর্মীদের বাদ দিয়ে নিয়োগকারী সকল বিদেশী কর্মীদের স্ট্যান্ডার্ড বাসস্থান প্রদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
শ্রমিকদের আবাসন ও সুবিধাগুলির ন্যূনতম মান ২০২১ গেজেট করেছে, যা মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির রূপরেখা দিয়েছে। এই অধ্যাদেশে শ্রম বিভাগের মহাপরিচালককে ক্ষমতায়ন করা হয়েছে।