ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ইসরাইলের ‘নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা’ গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করতে বাধ্য হয়েছে। ইসরাইল অভিমুখে গাজা থেকে যখন প্রতিরোধ যোদ্ধারা বৃষ্টির মতো রকেট নিক্ষেপ করে যাচ্ছিলেন তখন বৃহস্পতিবার রাতে ওই মন্ত্রিসভা বলেছে, তারা যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ‘মিশরীয় প্রস্তাব’ মেনে নিয়েছে।
ইসরাইলি মন্ত্রিসভার গতরাতের ঘোষণা অনুযায়ী, আজ (শুক্রবার) স্থানীয় সময় ভোররাত ২টা থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা ওসামা হামদান যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি লেবাননের আল-মায়াদিন টেলিভিশন নেটওয়ার্ককে বলেছেন, “প্রতিরোধ আন্দোলন মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে এই নিশ্চিয়তা পেয়েছে যে, গাজার ওপর আগ্রাসন বন্ধ হবে।”
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী মিশর সরকার বলেছে, এই যুদ্ধবিরতি দুই পক্ষ সমানভাবে বাস্তবায়ন করবে।
বিগত রমজান মাসের শেষদিকে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরের বায়তুল মুকাদ্দাস শহর ও আল-আকসা মসজিদের মুসল্লিদের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী সেনারা ভয়াবহ দমন অভিযান শুরু করলে গাজা থেকে প্রতিরোধ যোদ্ধার রকেট বর্ষণ শুরু করেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, ইসরাইল যেন আল-আকসা মসজিদ এবং এর নিকটবর্তী শেখ জাররাহ এলাকায় দমন অভিযান বন্ধ রাখে।
আল-মায়াদিন টেলিভিশনকে ওসামা হামদান গতরাতে আরো বলেছেন, “বায়তুল মুকাদ্দাস (জেরুজালেম) শহরের শেখ জাররাহ এলাকা এবং আল-আকসা মসজিদ থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারও আমরা (মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে) নিশ্চয়তা পেয়েছি।”
ইসরাইলের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার ঘোষণাকে ফিলিস্তিনিদের বিজয় বলেও জানিয়েছেন ওসামা হামদান। তিনি বলেন, “ইহুদিবাদী ইসরাইলের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের বিজয় হয়েছে।”
পূর্ব বায়তুল মুকাদ্দাসের আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি বাহিনীর পাশবিক হামলার জের ধরে গত ১১ দিন দখলদার ইসরাইল ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট বর্ষণ শুরু হলে গত ১০ মার্চ রাত থেকে অধিকৃত এই উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
ইসরাইলি হামলায় ৬৫ শিশু ও ৩৯ নারীসহ অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। অপর দিকে ইসরাইলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নিক্ষিপ্ত রকেটের আঘাতে ১৩ ইহুদিবাদী নিহত হয়েছে।
সূত্র: পার্সটুডে ও আল জাজিরা