মোহাম্মদ আলী, পাবনা প্রতিনিধি:
শৃঙ্খলা নিরাপত্তা প্রগতি বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র মূলনীতি। আর এই মুলনীতি বাস্তবায়নে নিরালসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। বাংলাদেশ পুলিশের একজন গর্বিত, দক্ষ, চৌকস পুলিশ অফিসার মোঃ জালাল উদ্দিন। যিনি রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার বড়াইগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্ত্রান। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করে ২০০৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। চাকুরী শুরুতেই তিনি সাব-ইনেস্পেক্টর হিসাবে ঢাকা মেট্রোপলিটিনে যোগদান করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে, ২০১৭ সালে পাবনা জেলা সদর থানা ও ফরিদপুর থানাতে (তদন্ত) অফিসার্স ইনচার্জ হিসাবে দক্ষতার সাথে কাজ করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে আতাইকুলা থানার অফিসার্স ইনচার্জ হিসাবে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিলে যোগদান করেন কর্মকালিন সময় তিনি দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি পাবনা জেলার শ্রেষ্ট পুলিশ অফিসার হিসাবে দুইবার নির্বাচিত হন এবং পাবনা জেলার আতাইকুলা থানায় সর্ব প্রথম সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় পাবনা জেলা পুলিশ সুপার কর্তৃক পুরুস্কার লাভ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে সন্তানের জনক। বর্তমান তিনি গত ১৬ ই জুন ২০২২ থেকে পাবনা জেলার চাটমোহর থানায় অফিসার্স ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বরত আছেন।
ওসি মো: জালাল উদ্দিনের সময়কালে (৩০-৪-২০২১ থেকে ১৬-৬-২০২২) থানাবাসীর প্রাপ্তি-
পাবনা জেলার আতাইকুলা থানা এক সময় সন্ত্রাস, মাদক, চুরি ডাকাতি এবং চরমপন্থী অধ্যুষিত এলাকা ছিল। ২০০১ সালে আতাইকুলা থানা গঠনের পর থেকেই ক্রাইম জোন হিসাবে চিহ্নিত হয়। দীর্ঘদিন চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল আতাইকুলা থানা। গত বছরের ৩০ এপ্রিল ২০২১ সালে পাবনার আতাইকুলা থানায় অফিসার্স ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন মোঃ জালাল উদ্দিন। তার যোগদানের পর থেকেই যেন রাতারাতি বদলে যেতে থাকে আতাইকুলা থানার দৃশ্যপট।
উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তি গুলোর মধ্যে নিম্নে তুলে ধরা হলো:
- অফিসার্স ইনচার্জ হিসাবে আতাইকুলা থানায় দায়িত্বে থাকাকালীন প্রায় দেড় যুগের আধিপত্য চাঁদাবাজি প্রথা ভেঙ্গে এক সাহসি চেলেঞ্জ্যএ তিনি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন নিম্ন-দরিদ্র অসহায় স্বল্প আয়ের মানুষদের। কিছু অসৎ লোক রাজনৈতিক নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে গড়ে তোলে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের দল। আর এই সমস্ত সেন্ডিকেটের লোকেরাই আতাইকুলা, মাধপুর, বনগ্রাম,পস্পুপাড়া,কুচিয়ামোড়াসহ বেশ কয়েকটি বাজারের বাসস্ট্যান্ড পয়েন্টে প্রতিদিনই ৩০/৩৫ হাজার টাকা প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদাবাজি করত। ভ্যান, অটোবাইক, সিএনজি, লেগুনা, নসিমন, করিমন চালকরা টাকা দিতে দেরি করলে চাঁদাবাজরা লাঠি দিয়ে পেটাতো চালকদের এবং কেড়ে নোয়া হতো গাড়ির চাবি।অসহায় চালকদের বোবা কান্নায় শুধু ছিলো শান্তনা। যা দেখে মনে হয়েছে প্রশাসন যেন তাদের কাছে জিম্মি। গাড়ি দাঁড় করিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজির কারণে প্রতিনিয়তই ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হতো। অফিসার্স ইনচার্জ হিসাবে আতাইকুলা থানায় দায়িত্বে থাকাকালীন এমন চাঁদাবাজি বন্ধ করাই ছিলো তার সব চাইতে বড় চ্যালেঞ্জ যা তিনি সফলভাবে বন্ধ করতে সক্ষম হন।
- জেলা পুলিশ পাবনার উদ্যোগে পাবনা জেলার বিভিন্ন বাজারসমূহ সিসিটিভি কাভারেজের আওতায় নিয়ে আসার পদক্ষেপ হিসেবে আতাইকুলা থানা এলকার সিমান্তবর্তী প্রবেশ পথসহ থানার বিভিন্ন বাজারে সিসিটিভি স্থাপন।
- পাবনার আতাইকুলা থানাধীন বনগ্রাম অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের গোলঘর ও রাস্তা নির্মাণ এবং ব্যারাকের সংস্কার ও মেরামত কাজের ১২ জুন ২০২২।
- আতাইকুলা থানা কর্তৃক সরকারী শুল্ক কর ফাঁকি দেয়া ৬ লক্ষ পিচ আকিজ বিড় ও একই কাজে ব্যাবহারকৃত ১টি পিকআপ ভ্যানসহ তিনজকে গ্রেফতার করা।
- মাদক নিয়ন্ত্রন ও আইন-শৃংখলা রক্ষায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সাথে মতবিনিময় সভা করা। এছাড়াও মসজিদে গিয়ে পর্যন্ত মানুষকে জানিয়েছেন পুলিশ জনতার বন্ধু।
- আতাইকুলা থানা পুলিশের ‘নারী শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সেবা ডেস্ক’ এর সহায়তায় দীর্ঘ ০৬ বছর পর হারানো শিশু আমানউল্লাহ (১২) কে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা।
- অস্ত্র: রিভলভার ২ টি, সুটারগান ৭টি, গুলি ৩ রাউন্ড।
- মাদক: ৮ কেজি ৬০০ গ্রাম গাজা, ১০১৬ পিচ ইয়াবা, ২৫ গ্রাম হিরোইন, নকল বিড়ি ৬ লক্ষ উদ্ধার করেন।
- আতাইকুলা থানাধীন বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিতে জমে থাকা পানির জলবদ্ধা নিস্কাশন ব্যবস্থা করা।
- বিনা পয়সায় থানার ডিউটি অফিসার দ্বারা সাধারণ ডায়রি ও অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা ও সেই অনুযায়ী তাৎক্ষনিক প্রদক্ষেপ গ্রহন করা।
- সাধারণ সেবা প্রত্যাশিদের সার্বক্ষনিক সরাসরি যোগাযোগ ও দেখা করার সুযোগ ছিলো।
অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ হাফিজুর রহমান:
বাংলাদেশ পুলিশের একজন দক্ষ, চৌকস পুলিশ অফিসার মোঃ হাফিজুর রহমান, তিনি বিভাগীয় শহর রাজশাহী জেলার কৃতিসন্তান। রাজশাহী শহরের হাদির মোড় এলাকার প্রয়াত সাবেক স্কুল শিক্ষক মাদার বখস মন্ডল এর কনিষ্ঠ সন্তান হাফিজ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগ থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করে ২০০৮ সালে যোগদান করেন পুলিশ বিভাগে। চাকুরীর প্রথমে বগুড়ায় দুপচাচিয়া, শেরপুর থানাতে পরবর্তীতে চাপাইনবাবগঞ্জ এর শিবগঞ্জ ও সদর মডেল থানায় দক্ষতা ও সুনামের সাথে চাকরি করেন। পদোন্নতি পেয়ে ২০১৭ সালে পাবনা সদর থানাতে ওসি (অপারেশন) হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে প্রায় ৩ বছর ০৮ মাসের অধিককাল সময়ে তার পেশাদারিত্ব, কাজের দক্ষতা ও জনগণের প্রতি সেবামূলক মনোভাবের কারনে পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ মহিবুল ইসলাম খান বিপিএম তাকে আটঘরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে পদায়ন করান। আটঘরিয়া থানার ১৬ মাস কর্মকালে তিনি পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনা ও সার্বক্ষণিক তদারকিতে আটঘরিয়ার আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। আটঘরিয়া ছিল যেকোন ধরনের খুন খারাবি মুক্ত। পাবনা জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে তিনি গত ১৬ ই জুন অফিসার ইনচার্জ হিসাবে আতাইকুলা থানাতে যোগদান করেন।
আতাইকুলা থানাবাসী প্রত্যাশা:
আতাইকুলা থানাবাসী সদ্য যোগদানকৃত আতাইকুলা থানার এই অফিসার ইনচার্জের যোগদানে অনেকটা আনান্দিত। সেইসাথে সুশীল সমাজ মনে করছেন সাবেক অফিসার ইনচার্জ মোঃ জালান উদ্দিন যে ভাবে চাদাবাজ, সন্ত্রাস, মাদক, নারীনির্যাতনসহ বিভিন্ন অপকর্ম শক্তহস্তে দমন করেছেন নতুন এই অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাফিজুর রহমান আরও কঠোর হস্তে দমন করবেন এবং আতাইকুলা থানাবাসীর নিকট জনবান্ধব পুলিশ হিসেবে জনগণের জন্য কাজ করবেন।