ডেস্ক নিউজ:
মালয়েশিয়ার পেনাং রাজ্যের প্রধান প্রধান ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের মান্যবর হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার পেনাং রাজ্যে তাঁর প্রথম দাপ্তরিক সফরের প্রারম্ভে ৮ নভেম্বর ২০২১ তারিখ সোমবার পেনাংয়ের চাইনিজ চেম্বার অব কর্মাস (পিসিসিসি)- এর ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভা করেন এবং ৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখ মঙ্গলবার পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম)-এর উচ্চপর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে উভয় ব্যবসায়িক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ থেকে সাধারণ কর্মী ও প্রকৌশলী নিয়োগে তাদের আগ্রহ ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার পেনাংয়ের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দের নিকট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের গৃহীত কর্মসূচির বর্ণনা দেন। তিনি জানান যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি বলেন যে, সরকার কর্তৃক দেশে যোগাযোগের প্রবেশগাম্যতা নিশ্চিতকল্পে আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ, বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ সম্বলিত ১০০টি ইকনোমিক জোন ও ২৮টি হাইটেক পার্ক স্থাপন এবং সরকার গৃহীত বিনিয়োগবান্ধব নীতিকৌশলের কারণে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে সমগ্র বিশ্বে আজ পরিচিতি লাভ করেছে। হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান।
পেনাংয়ের চাইনিজ চেম্বার অব কর্মাস (পিসিসিসি)- এর প্রেসিডেন্ট দাতো সেরি হং ইয়েম ওয়াহ তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, পেনাং রাজ্য মূলতঃ ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সেক্টর নির্ভর। কোভিড পরবর্তী বিশ্বে এ সেক্টর দ্রুত সম্প্রসারণমান বলে তিনি উল্লেখ করেন। কিন্তু দক্ষ জনবল, বিশেষ করে প্রকৌশলী সংকটের কারণে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরও বলেন যে, পেনাং রাজ্য সরকার পেনাংয়ে ২০টির মতো মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছে। এ সব প্রজেক্টেও প্রকৌশলীর চাহিদা ব্যাপক। তিনি পেনাং রাজ্যে প্রকৌশলী নিয়োগে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতা কামনা করলে মান্যবর হাইকমিনার তাদের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম)-র সভায় এফএমএম-এর চেয়ারম্যান দাতো জিমি সি. কে. অং বলেন যে, পেনাংয়ের শিল্প প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও অদক্ষ উভয় প্রকারের বিদেশি শ্রমিকের অভাব রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মঠ ও নিষ্ঠাবান বলে উল্লেখ করেন। তিনি পেনাংয়ের শিল্প উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে প্রকৌশলীর পাশাপাশি অদক্ষ শ্রমিক নিয়োগের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন। হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশে অর্ধশত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও শতাধিক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং কারিগরী কলেজ থেকে প্রতিবছর হাজার হাজার উন্নত কারিগরী জ্ঞানসম্পন্ন ও মেধাবী প্রকৌশলী চাকুরীর জন্য তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া তিনি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় যোগ্যতাসম্পন্ন ও মেধাবী গ্রাজুয়েটদের মালয়েশীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের বিষয়েও হাইকমিশনের সহায়তার বিষয়ে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মালয়েশিয়ার চাহিদা অনুযায়ী সকল পেশায় দক্ষতাসম্পন্ন যে কোন সংখ্যক সাধারণ কর্মী ও প্রকৌশলী সরবরাহে বাংলাদেশের সদিচ্ছা ও সক্ষমতার বিষয়ে পেনাংয়ের শিল্পমালিকদের আশ্বস্ত করেন।
পেনাংয়ের চাইনিজ চেম্বার অব কর্মাস (পিসিসিসি) ও পেনাংয়ের ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স (এফএমএম) আয়োজিত উভয় সভায় সংগঠন দুটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাউন্সেলর (বাণিজ্যিক) মোঃ রাজিবুল আহসান ও পেনাংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারী কনসাল দাতো শেখ ইসমাইল উপস্থিত ছিলেন।